এম.এ জাহান।।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ সন্ধ্যায় র্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর কাবুল হত্যা মামলার ২৩ বছর যাবত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী বিপ্লব (৫০), জেলাঃ মানিকগঞ্জ’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে পারস্পরিক মতবিরোধের জের ধরে আসামী বিপ্লব ও তার সহযোগী অন্যান্য আসামী মানিকগঞ্জ সদর থানাধীন গড়পাড়া এলাকায় জনৈক মোতালেব হোসেন এর বাড়িতে ধারালো অস্ত্রসহ হামলা চালায়। মোতালেব হোসেন তখন বাড়িতে না থাকায় আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাড়ির সামনে ভিন্ন মতাদর্শের ভিকটিম কাবুল খা’কে পেয়ে ধৃত আসামী বিপ্লব কাবুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে কাবুল’কে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন কাবুলকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার কাবুল’কে মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনার পরের দিন মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় বিপ্লবসহ পলাতক অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার মামলা নং-১১(৭)৯৯, ধারা-১৪৮/১৪৯/৩০২/১১৪ দন্ডবিধি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামী বিপ্লবসহ ১৩ জন আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন যার ভিত্তিতে বিজ্ঞ দায়রা আদালত, মানিকগঞ্জ বিচারকার্য পরিচালনা করেন এবং আসামি বিপ্লব’কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। উক্ত ঘটনার পর হতে আসামি বিপ্লব দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পলাতক ছিলো।
আসামীর জীবন বৃত্তান্তঃ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায় যে, আসামী ১৯৭২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন পাঞ্জনখাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করে। সে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে। ব্যক্তিগত জীবনে আসামী অবিবাহিত। ঘটনার পর হতে সে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করলেও সর্বশেষ সে মিরপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলো।
আত্মগোপনে থাকাকালীন সময় আসামীর জীবনযাপনঃ উক্ত ঘটনার পর থেকেই আসামী পরিচিত লোকজন থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখার জন্য ঘটনার পর ঢাকা চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আসামী নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা ও মায়ের নাম ঠিক রেখে নিজের নাম বিপ্লবের পরিবর্তে শহিদুল ইসলাম ব্যবহার করে। এছাড়াও আত্মগোপনে থাকাকালীন গ্রেফতার এড়াতে সে ক্রমাগতভাবে পেশা পরিবর্তন করে আসছিলো। প্রথমদিকে সে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দোকানের কর্মচারী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রী ও পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতারণামূলক দালালি করে জীবিকা নির্বাহ করতো।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।