এম.এ জাহান।।র্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ী এবং নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছ, নকল প্রসাধনী সামগ্রী ও লাইসেন্সবিহীন ভেজাল ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৫টি প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ২০,১০,০০০/-টাকা জরিমানা এবং বিপুল পরিমান জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছ, নকল প্রসাধনী সামগ্রী এবং ভেজাল ঔষধ জব্দ করে।
সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল জানতে পারে যে, রাজধানীর হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ী এবং নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন যাবৎ নামীদামী বিদেশী ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে নকল কসমেটিক্স উৎপাদন এবং বিক্রয়, মাছের আড়ৎ এ চিংড়ি মাছের মধ্যে জেলিযুক্ত করে বিক্রয়, লাইসেন্সবিহীন ল্যাবরেটরীজে ভেজাল ঔষধ উৎপাদন এবং বিক্রয় করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় ১৩/০৯/২০২২ তারিখে রিজন হারবাল ফ্যাক্টরীতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে নকল কসমেটিক্স উৎপাদন এবং বিক্রয় করার অপরাধে রিজন হারবাল নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক ১। মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (৪৫), পিতা-মোঃ আব্দুস সাত্তার হাওলাদার, সাং- মহানগর প্রজেক্ট, থানা-হাতিরঝিল, ঢাকা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা, ২। ম্যানেজার মোঃ মামুনুর রহমান (৪৫), পিতা-মৃত খলিলুর রহমান, সাং-উলন কাচাবাজার, থানা-হাতিরঝিল, ঢাকা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা এবং সহযোগী ৩। আহাম্মেদ হাওলাদার (২৬), পিতা-মোঃ ইসরাফিল হাওলাদার, সাং-রামপুর মহানগর প্রভোষ্ট, থানা-হাতিরঝিল, ঢাকা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা, ৪। লাল মিয়া (২৪), পিতা-মোঃ আব্দুস সাত্তার, সাং-উত্তর আলরাজি গোপালপুর, থানা-ঠাকুরগাঁও, জেলা-ঠাকুরগাঁও’কে ১,০০,০০০/- টাকা জরিমানা এবং ৫। মোঃ মালেক (৩৫), পিতা-মৃত আলাল উদ্দিন, সাং-রায়পুর মামা পাড়া, থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোনা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা করে।
যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় আল্লাহর দান মাছের আড়ৎ এবং মন্ডল ফিস নামক দোকানে চিংড়ি মাছে জেলিযুক্ত করে বিক্রয় করার অপরাধে উক্ত প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মালিক ১। মোঃ মুসা গাজী (৩৬), পিতা-মোঃ ফজর আলী গাজী, সাং-বাধঘাটা, থানা-শ্যামনগর, জেলা-সাতক্ষীরা’কে ১০,০০০/-টাকা জরিমানা ও ২। মোঃ মোস্তফা কামাল (৩০), পিতা-মৃত আবুল কাশেম, সাং-শিমুনিরা, থানা-দেভাটা, জেলা-সাতক্ষীরা’কে ২,০০,০০০/-টাকা জরিমানা করা হয়।
নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় স্টার ল্যাবরেটরীজ নামক লাইসেন্সবিহীন কোম্পানী ভেজাল ঔষধ তৈরীর অপরাধে উক্ত ল্যাবরেটরীজ এর মালিক ১। মোঃ সাদমান (১৮), পিতা মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাং-বড়কুল, থানা-হাজিগঞ্জ, জেলা-চাদপুর’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা, ২। আব্দুল্লাহ আল মামুন (৫০), পিতা-আব্দুল মান্নান মোল্লা, সাং-ইসলামদি, থানা-আড়াইহাজার, জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা এবং ৩। মোঃ ওজায়ের (৩২), পিতা-আব্দুল মতিন, সাং-চরখলিফা, থানা-দৌলতখান, জেলা-ভোলা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও ক্রিসেন্ট ফার্মা নামক প্রতিষ্ঠানকে ভেজাল ঔষধ আমদানীর অপরাধে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক ১। মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪৫), পিতা-মৃত শুকুর আলী, সাং-খাসকাউলিয়া, থানা-চৌহালী, জেলা-সিরাজগঞ্জ’কে ২,০০,০০০/-টাকা এবং তার সহযোগী ২। মোঃ জাকির হোসেন (৫৭), পিতা-মৃত মুক্তার হোসেন, সাং-বেলুহা, থানা-আঙ্গুলঝাড়া, জেলা-বরিশাল’কে ২,০০,০০০/-টাকা, ৩। এস এম আবু হানিফ (৪৫), পিতা-ফজলুল হক সরদার, সাং-দামাপাড়া, থানা-আঙ্গুলঝাড়া, জেলা-বরিশালকে ২,০০,০০০/-টাকা, ৪। মোঃ মাহমুদুর রহমান (৪০), পিতা-মোঃ আব্দুল লতিফ, সাং-দাসপাড়া, থানা-বাউখাল, জেলা-পটুয়াখালীকে ২,০০,০০০/-টাকা ও ৫। মোঃ শাকিল আহমেদ (২৫), পিতা-মোঃ আঃ করিম, সাং-চাঁদের শাটিয়া, থানা-গৌরীপুর, জেলা-মনমনসিংহ’কে ২,০০,০০০/-টাকা জরিমানা করে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত।
উক্ত অভিযানে রিজন হারবাল ফ্যাক্টরী হতে বিপুল পরিমান নকল কসমেটিক্স, আল্লাহর দান মাছের আড়ৎ এবং মন্ডল ফিস হতে বিপুল পরিমান জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছ, স্টার ল্যাবরেটরীজ ও ক্রিসেন্ট ফার্মা হতে বিপুল পরিমানে ভেজাল ঔষধ জব্দ করা হয় এবং সর্বমোট ২০,১০,০০০/-টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত ভেজাল সামগ্রীসমূহকে ধ্বংস করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করে এবং তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এই সকল প্রতারনামূলক কার্যক্রম করে আসছে বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী রিজন হারবাল ফ্যাক্টরীর মালিক মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (৪৫), পিতা-মোঃ আব্দুল সাত্তার হাওলাদার, সাং-রামপুর মহানগর প্রভোষ্ট, থানা-হাতিরঝিল, ঢাকা’কে ১,০০,০০০/-টাকা জরিমানা করা হয়। উক্ত জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস্ এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন আইন ২০১৮ এর ১৫ এবং ২৭ ধারা মোতাবেক তাকে ০১ (এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত।
অদূর ভবিষ্যতেও এরূপ অসাধু নব্য প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৩ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে দৈনিক দিগন্তর প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন সহকারী পুলিশ সুপার ফারজানা হক, সহকারী পরিচালক (মিডিয়া)।