জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং এবং সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১১ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঢাকায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টায় প্রতিবাদ সমাবেশ এবং ১২ আগস্ট শুক্রবার সারাদেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
সোমবার (০৮ আগস্ট) বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুব দলের প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। আজকের এই যুব সমাবেশে জনসমাগমের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের (সরকার) দিন ফুরিয়ে এসেছে, তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের যুব সমাজ জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি যুবকদের এই আত্মত্যাগের (ভোলার আবদুর রহিম ও নুরে আলম) মধ্য দিয়ে, তাদের দূর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশকে তারা আবার মুক্ত করবে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার টিকে আছে মানুষকে প্রতারণা করে। আজকের জ্বালানি সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, আজকের বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং, বিদ্যুতের সংকট সব কিছুর মূল্যে হচ্ছে এই সরকারের দুর্নীতি, চরম দুর্নীতি। আপনারা দেখেছেন যে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এবং তাদের নিজস্ব লোকজনদের তারা মুনাফা পাইয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৭ বছরে এদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর যে হিসাব সেই হিসাব অনুযায়ী ২৭০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকে তার হিসাব আছে ২৩৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার। বাকি ৩০ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার কোথায় গেলো? আজকে জাতি এটা জানতে চায়। এটা একটা বিরাট শুভঙ্করেরে ফাকি, বিরাট একটা লুটের চিত্র। এই লুট ও চুরি যে শুরু হয়েছে এই লুট ও চুরি করে তারা এদেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদি বিএনপি শক্তভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় এই সরকার এক মিনিট ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। আমাদের সকলে রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের সীমানা আটকিয়ে গেছে, প্রেসক্লাব-বিএনপি অফিস। এর বাইরে যদি আমরা না যেতে পারি তাহলে কখনোই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমাদেরকে এর বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে, আমাদেরকে মিছিলে নামতে হবে, আমাদেরকে হরতালে যেতে হবে, আমাদেরকে অবরোধে যেতে হবে-তাহলে সরকারের পতন ঘটবে, নইলে এই সরকারের পতন ঘটবে না। অনেক কথা বললাম। অনেক চালু হয়ে গেছে আমার বিরুদ্ধে আবারো। আর কিছু বলতে চাই না। ইনশাল্লাহ রাজপথে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কর্মসূচিতে আমরা যদি হার্ড লাইনে না যাই এবং সরকারকেও আমরা আমাদের শক্তি প্রদর্শন না করি তাহলে সরকার সরকারের জায়গা থাকবে আর আমরা জনসভা করবো, অগণিত মামলায় জর্জরিত হবো। কিন্তু আমরা সরকার পতন ঘটাতে পারবো না।
তিনি বলেন, আমি এখনো মনে করি, রাজপথে আন্দোলনে থাকার মতো শক্তি সাহস আমার আছে, আমার যখন আছে প্রত্যেকেরই আছে। আমরা কেউ কাপুরুষ নই। সেজন্য বলছি, আমাদের এই যে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি এই কর্মসূচির বাইরে গণতন্ত্র ও সংবিধান সম্মতভাবে অনেক কর্মসূচি আছে যে কর্মসূচি আমরা রাজপথে দিলে সরকারের বুক কেঁপে উঠবে। সেখানেই আমাদের যেতে হবে।
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্র দলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, যুব দলের মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, কামরুজ্জামান দুলাল, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন, ইসাহাক সরকারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।