পৃথক ঘটনায় মাগুরায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) লাবনী আক্তারের ঝুলন্ত লাশ এবং পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামের কৃতিসন্তান বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ত্রিশতম বিসিএস) খন্দকার লাবনী আক্তার (৪৫) বুধবার রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামে নানা মৃত কুদ্দুস মাষ্টারের বাড়িতে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লাবনীর পিতা খন্দকার শফিকুল আজম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাকোল রাইচন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। লাবনী আক্তারের স্বামী মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের তারেক আব্দুল্লাহ বর্তমানে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছে। তারেক আব্দুল্লাহ পেশায় একজন ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) হিসেবে ঢাকাতে কর্মরত। লাবনী আক্তার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি দুই দিন আগে ছুটিতে মাগুরার শ্রীপুরের নানা বাড়িতে আসেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। লাশ পোস্ট মডামের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাগুরা পুলিশ লাইনস থেকে এক কনস্টেবলের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ লাইনসের ব্যারাকের ছাদ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মাহমুদুল হাসান (২৩) নামের ওই কনস্টেবলের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। দেড় মাস আগে তিনি মাগুরায় বদলি হয়ে আসেন। পুলিশের ধারণা, নিজ নামে ইস্যু করা অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
খন্দকার লাবণীর পিতা খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে দ্বন্দ লেগে ছিল। এ কারণে একে অপরকে এড়িয়ে চলছিল। স্বামী-স্ত্রীর এই দ্বন্দের কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে। সে এর ১৫ দিন আগে ও সপ্তাহখানেক আগে দুবার আত্মহত্যা চেষ্টা করেছে।
খন্দকার লাবণীর কাকি লতিফুন্নাহার বলেন, লাবনীর পরিবার অনেক দিন যাবত গ্রামের বাড়ি বরালিদাহ আসেনা। সর্ব শেষ দুই মাস আগে ছুটিতে এসে ছিল । আমরা সংবাদ পেয়ে লাবনীর নানা বাড়িতে যাচ্ছি। লাশের পোস্ট মডাম হয়ে গেছে। সারঙ্গদিয়া নানা বাড়িতে গোসল দেওয়া শেষে বরালিদাহ গ্রামের বাড়িতে আছর নামাজ বাদ জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মাগুরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান দেড় মাস আগে মাগুরায় বদলি হন। এর আগে তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি খন্দকার লাবণীর দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুটি ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটুকু নিশ্চিত, দুজনেই আত্মহত্যা করেছেন। দুজনের আত্মহত্যার কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত করছে। এ ছাড়া আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।