জেলা প্রতিনিধি : জোয়ারের অস্বাভাবিক পানিতে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ ও রামপাল উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্লাবিত গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। বেশকিছু মৎস্য ঘেরও তলিয়ে গেছে জোয়ারের পানিতে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালে স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় ৩-৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানির সমস্যা সমাধানের জন্য অতিদ্রুত প্লাবিত এলাকায় রিংবাঁধ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হবে।
মোড়েলগঞ্জের পানগুছি নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় মোড়েলগঞ্জ পৌরসভার কাপুড়পট্টি সড়ক, কাঁচাবাজার, ফেরিঘাট, কালাচাঁদ মাজার এলাকা, সানকিভাঙ্গা প্লাবিত হয়েছে। এর বাইরে উপজেলার ঘষিয়াখালী, জিউধরার পালেরখন্ড, কাকরাতলী, শনিরজোড়, সোনাতলা, চন্দনতলা, জিউধরা, হোগলাবুনিয়ার ও বারইখালীসহ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
অন্যদিকে মোংলা- ঘোষিয়াখালি বঙ্গবন্ধু নৌ চ্যানেলসহ দাউদখালি, বগুড়া, তেঁতুলিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রামপাল উপজেলার গিলাতলা বাজার, বাঁশতলী, ভোজপাতিয়া, হুড়কা, রাজনগরসহ পেড়িখালি ইউনিয়নের অনেক এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। মোংলা উপজেলারও কয়েক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রামপাল সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা সবুর রানা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তের প্রভাবে দিনদিন রামপালের দাউদখালি নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগে জোয়ারের পানি ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। এখন জোয়ারের পানিতে রামপালের সদর ইউনিয়নসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। রামপালে জোয়ারের পানিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত বেড়িবাঁধ না দেওয়া হলে আগামীতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
এর আগে বুধবার (১৩ জুলাই) বিকেলে ভৈরব নদীর পানির চাপে বাগেরহাট সদর উপজেলার কেশবপুর এলাকার একটি কালভার্ট ও কালভার্টের দুই পাশের প্রায় ২০ ফুট রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছিল। উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে তাৎক্ষণিকভাবে বালুর বস্তা ও মাটি দিয়ে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ জানান, পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের সময় সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাসহ ওই উপজেলা ও রামপাল উপজেলার বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মূলত এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকার কারণে জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে জোয়ারের পানি ঠেকানোর জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ করা হবে।।