1. admin@dailydigantor.com : admin :
কোম্পানি খুলে প্রতারণা-যৌন হেনস্তার অভিযোগে এমডি আটক - দৈনিক দিগন্তর
রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

কোম্পানি খুলে প্রতারণা-যৌন হেনস্তার অভিযোগে এমডি আটক

দৈনিক দিগন্তর ডেস্ক
  • আপডেট সময় : বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

ডেস্ক রিপোর্ট : টাকা ছাড়াই চাকরির চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে অল্পশিক্ষিত দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত বেকারদের আকৃষ্ট করতো রিয়েল ফোর্স সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মৌখিকভাবে নিয়োগের পর কর্মীদের আট ঘণ্টার জায়গায় করানো হতো ১২ ঘণ্টা ডিউটি।

ঠিকমতো দেওয়া হতো না বেতন। নারী নিরাপত্তা কর্মীদের করা হতো শ্লীলতাহানি। প্রতারণার মাধ্যমে করা হতো চাকরি প্রার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ। এভাবেই চলছিল সংস্থাটির কার্যক্রম। শুধু এসবই নয়, রিয়েল ফোর্স সিকিউরিটির বিরুদ্ধে নারী কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, মানসিক নির্যাতন, কু-প্রস্তাব ও জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া কর্মীদের প্রাপ্য বেতন না দেওয়া, প্রতিবাদ করলে জরিমানা বা প্রশাসনের ভয় দেখানো, অতিরিক্ত ডিউটি করানোর মতোও অভিযোগ আছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে।

 

এতসব অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলক্ষেতে অবস্থিত রিয়েল ফোর্স সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমির হামজাকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)।

তাকে আটকের পর মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

সকালে আটকের পর আমির হামজাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, তিনি ১৯৯৮ সালে ঢাকায় একটি সিকিউরিটি এজেন্সিতে চাকরি শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্বনামধন্য সিকিউরিটি কোম্পানি ও সুপার শপেও বিভিন্ন পদে কাজ করেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইয়াং ফোর্স, এলিট ফোর্স, অরিয়ন সিকিউরিটিজেও নানা পদে দায়িত্ব পালন করেন।

 

২০১৭ সালের শুরুতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিয়েল ফোর্স নামে সিকিউরিটি কোম্পানি চালু করেন। এতে আমির হামজাকে আর্থিক সহায়তা দেন চট্টগ্রামের আলীকদম এলাকার ব্যবসায়ী ইউনুস মিয়া। তারা প্রথমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করতেন। নিয়োগ অনুযায়ী বকেয়া বিল তুলতেন।

২০২০ সালে কোম্পানিকে লিমিটেড কোম্পানিতে উন্নিত করেন আমির হামজা। এরপর এসিআই লজিস্টিকের ‘স্বপ্ন’ সুপার শপের শো-রুমে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগের একটি বড় চুক্তি সই করেন। আমির হামজার রিয়েল ফোর্স’র মূল কার্যালয় বারিধারার ডিওএইচএস এলাকায়। এছাড়া রাজধানীর খিলক্ষেত ও চট্টগ্রামের হালিশহরে তাদের দুটি শাখা কার্যালয় আছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, তারা মূলত বিভিন্ন থার্ড পার্টি, দালালের মাধ্যমে অনলাইনে বিজ্ঞাপন নিয়ে লোকবল সংগ্রহ করতেন। তাদের কার্যক্রম অনুসারে চাকরি প্রত্যাশীদের প্রথমে দালালের সঙ্গে দেখা করে তাদের হাতে ৪ হাজার টাকা দিতে হতো। এরপর দালালরা চাকরি প্রত্যাশীদের বারিধারা অফিসে রিপোর্ট করতে বলতো। তার আগে আমির হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করতো দালাল দল।

আমির হামজা তাদের কাছ থেকে ফরম পূর‌ণ ও ইউনিফর্ম বাবদ আরও ৪ হাজার টাকা নিতেন। তারপর চাকরি প্রার্থীদের সুপারভাইজার হিসেবে আট ঘণ্টা ডিউটি ও মাসিক ১৪ হাজার ৫০০ টাকা বেতনের অফার করতেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনলাইনে আলোচনার সময় তাদের কোনো প্রকার অর্থের কথা বলা হতো না। অর্থাৎ, এ কাজের জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া লাগবে না বলে তাদের জানানো হতো। চাকরি দেওয়ার পর তাদের ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১২ ঘণ্টা করে সিকিউরিটি গার্ডের ডিউটি, ডে-নাইট একত্রে দায়িত্ব পালন করানো হতো। কিন্তু বেতন দেওয়া হতো না।

নারী নিরাপত্তা কর্মীদের অভিযোগ, আমির হামজা বিভিন্ন সময় তাদের কু-প্রস্তাব দিতেন। এমনকি প্রায়ই শ্লীলতাহানির চেষ্টা করতেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ১’র এ সিও বলেন, চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি ছিল ১৪ হাজার ৫০০ টাকা বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু স্বপ্নের সঙ্গে চুক্তিতে লেখা ১০ হাজার ৫০০ টাকা। সেখানে ৮ ঘণ্টা নয়, ১২ ঘণ্টা ডিউটি করতে বাধ্য করা হতো তাদের। এজন্য অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হতো না। কৌশল হিসেবে কোনো ধরণের নিয়োগপত্র ভুক্তভোগীদের হাতে দেওয়া হতো না।

রিয়েল ফোর্স সিকিউরিটিতে কর্মরত সদস্যদের যে ধরণের নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে, তা বৈধ নয়। ওয়াকিটকিসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ব্যবহারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে অনুমোদন নেওয়ার কথা থাকলেও তারা নেয়নি। যারা এসব নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করেছে তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটক আমির হামজার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‌্যাব-১’র অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর