নিজস্ব প্রতিবেদক ; করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণে। গতকাল কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। মাত্র ২৯ জনের নমুনায় নতুন করে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের গতি নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রেখেছে দ্রুত সময়ে কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ। কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দাবি করে বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় আমরা এশিয়ায় প্রথম এবং গোটা বিশ্বে শীর্ষ পঞ্চম।
গত বছর ২৭ জানুয়ারি থেকে দেশে করোনা টিকার নিবন্ধন শুরু হয়। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছে ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ জন। এ ছাড়া দুই ডোজের টিকা পেয়েছে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬১৪ জন মানুষ। তার মধ্যে বুস্টার ডোজ টিকা পেয়েছে এক কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৩৩৩ জন। এ পর্যন্ত দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, সিনোভ্যাক,ফাইজার, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে এলেও বৈশ্বিকভাবে দমে যায়নি করোনা।
এদিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নেমে আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও তৃতীয় ডোজ গ্রহণে অলসতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত চলবে বুস্টার ডোজ সপ্তাহ। নিয়মিত স্বাভাবিক টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে এক সপ্তাহজুড়ে ১৮ তদুর্ধ্ব চার মাস আগে দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন নাগরিকদের এখন তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়া হবে।
ঢাকা উত্তরে ২৭টি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও দক্ষিণের ১৪টিসহ ৪১টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ২৬৮টি টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি টিমের লক্ষ্য দিনে অন্তত ৫০০ ডোজ বুস্টার ডোজ প্রয়োগের। সেই হিসেবে রাজধানীতে প্রতিদিন এক লাখ ৩৪ হাজার বুস্টার ডোজ টিকা প্রয়োগের কথা রয়েছে। নির্বিঘ্নে এই বুস্টার ডোজ সপ্তাহ পালনের জন্য ইতোমধ্যে দুইজন টিকাদানকারী ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে একটি করে টিম গঠন করা হয়েছে।
এসব কেন্দ্রে নারীদের পর্দ ঘেরা বুথে টিকা দেয়া হবে এবং প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে গত ৩১ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুস্টার ডোজ সপ্তাহ পালনের এ তথ্য জানানো হয়। টিকাদান বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব সবাই দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার চার মাস পার হলে তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। নির্ধারিত সপ্তাহের যেকোনো দিন নিকটবর্তী টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিতে আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। টিকাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।
টিকাকেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে টিকা দেয়া শুরু হবে, বুস্টার টিকা নিতে অবশ্যই নিজের টিকা কার্ড সাথে নিয়ে যেতে হবে। এই সময়ে বুস্টার ডোজের পাশাপাশি করোনা টিকা দেয়ার স্বাভাবিক কার্যক্রমও চলমান থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনা প্রতিরোধে টিকা একটি কার্যকর সমাধান। করোনা টিকার সম্পূর্ণ সুফল পেতে অবশ্যই তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিতে হবে।