ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দিন আগে সংঘটিত ঘটনায় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের মামলার পর এবার ছাত্রলীগের ৩২জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ১০০জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ছাত্রদলের নেত্রী মানসুরা আলম।
রোববার (২৯ মে) বিকেলে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোঃ শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালতে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আইন বিভাগের ছাত্রী মনসুর আলম এই মামলা দায়ের করেছেন।
এই মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ২৬ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য শাহবাগ থানার ওসি কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় গত ২৪ এবং ২৬ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকায় সংঘটিত ঘটনার কথা উল্লেখ করে আসামিদের বিরুদ্ধে (ছাত্রলীগ) দন্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭,৩২৩,৩২৬,৩০৭,৪৪৭,৩৭৯ এবং ৫০৬ ধারায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ, হত্যার চেষ্টা, মোবাইল ও টাকা-পয়সা ছিনতাই সহ নানা অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমানকে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার, সহ সম্পাদক রাশেদ ফেরদৌস আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, সহ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামীম পারভেজ, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হিল বারী, উপ দপ্তর সম্পাদক মো. নাজির, উপ আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শাহিন তালুকদার, উপ দপ্তর সম্পাদক খান মোহাম্মদ শিমুল, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের নেতা অভিজ্ঞান দাস অন্তু, শামসুন নাহার হলের সভাপতি খাদিজা আক্তার উর্মি, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সামাদ আজাদ জুলফিকার, ঢাবির অমর একুশে হল শাখার সভাপতি এনায়েত এইচ মনন, অমর একুশে হলের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসেন সোহাগ, অমর একুশে হলের সহ সভাপতি রাকিব হোসেন, ঢাবির বিজয় একাত্তর হল শাখার সাবেক সহ সভাপতি মজিবুল বাশার, ঢাবির সলিমুল্লাহ হল শাখার কর্মী নাজিমুদ্দিন সাইমুন, শহিদুল্লাহ হলের সভাপতি শরীফ আহম্মেদ, চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকের, ঢাবির এফ রহমান হল শাখার কর্মী আব্দুর রহিম, ছাত্রলীগের কর্মী মাহমুদ চৌধুরী, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ, ঢাবির এস এম হল শাখার কর্মী সায়েম, ঢাবির এফ রহমান হল শাখার সভাপতি রিয়াজ, ঢাবির বঙ্গবন্ধু হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারিয়াল, ঢাবির শহীদুল্লাহ হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মুনিম শাহরিয়ার, সূর্যসেন হল শাখার কর্মী নাহিদ সানি, জগন্নাথ হলের কর্মী ঐশিক শুভ্র এবং সৌরভ চক্রবর্তী। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন জানান, গত ২৪ এবং ২৬ মে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্যশ্যে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। তার মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মানসুরা আলম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা দায়েরের আর্জি জানিয়েছে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ২৬ জুনের মধ্যে শাহবাগ থানার ওসিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।