আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কেন্দ্র” এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে সর্বস্তরের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সমাজে অবহেলিত দুস্থ,নির্যাতিত,অসহায় মানুষের কল্যানে অধিকার আদায়ে বঞ্চিত মানুষের পাশে তৃণমূল পর্যায় কাজ করছে এই সংগঠনটি।
গত প্রায় ১ যুগ ধরে আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করা সংস্থাটি এখন বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বময়। যা কিনা মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘ ঘোষিত নিয়ম-নীতি অনুসারেই পরিচালিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু কথাঃ
মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এমন এক অধিকার, যা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা।
মানবাধিকার সংস্থা মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলে, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্টায় বদ্ধপরিকর, সুতরাং সাংগঠনিক মর্যাদায় মানবাধিকার সংগঠনকে সকল সংগঠনের ঊর্ধ্বে মর্যাদা সম্পন্ন হিসেবে পরিগণিত করা হয়।
সংস্থার সদস্যরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে অসহায় নির্যাতিত নিপীড়িত ব্যক্তিবর্গকে আইনগত অধিকার ও ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে নিরলস নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করেন।
মানবাধিকার, মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেরই কিছু অধিকার রয়েছে, যেগুলো একজন মানুষ জন্মগতভাবেই পাওয়ার দাবিদার। এগুলো নিয়েই সে জন্মগ্রহণ করে এবং এগুলো হরণ করলে তার আর মানুষের মর্যাদা থাকে না। অধিকারগুলো কারও করুণা নয়, বরং যার যার প্রাপ্য। এগুলো লালন করার অনুমোদন সব মানুষেরই রয়েছে। কেউ কারও কাছ থেকে এ অধিকার কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা কখনোই রাখে না। মূলত যা কিছু মানবসত্তা বা মর্যাদাকে সুরক্ষিত করে, বিকশিত করে এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে, তাই মানবাধিকার।
সহজভাবে বলতে গেলে, মানবাধিকার হলো মানব আর অধিকারের সমন্বিত রূপ, অর্থাৎ মানব বা মানুষের অধিকার। আর এই মানবাধিকার সবার ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য; নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং সবার জন্যই আদায়যোগ্য। আর মানুষই হলো সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ জীব। এই শ্রেষ্ঠত্ব ঠিক রাখতে মানবাধিকারের গুরুত্ব অপরিসীম। এককথায় বলা যায়, মানুষ হিসেবে চলার পথে সব ধরনের ভয় ও অভাব থেকে মুক্তিই হলো মানবাধিকার।
মানবাধিকারের ধারণাটা খুব সাম্প্রতিক হলেও মানবাধিকার রক্ষার বাস্তবিক ও ঐতিহাসিক বেশ কিছু কার্যক্রম ও চর্চা পৃথিবীর ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে, যেগুলোকে মানবাধিকার ক্রমবিকাশের মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে সাইরাস সিলিন্ডার, আরবের মদিনা সনদ, ম্যাগনাকার্টা, পিটিশন অব রাইটস ও বিল অব রাইটস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ওই বিষয়গুলোকে মানবাধিকারের সনদ বা মাইলফলক বলার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।
যদি সাইরাস সিলিন্ডারের কথা বলতে যাই, তাহলে দেখা যায় যে, ৫৩৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে পারস্যের রাজা দ্বিতীয় সাইরাস ব্যাবিলন আক্রমণ করে সেখানকার নির্যাতিত জনগোষ্ঠী ও দাস-দাসীদের মুক্ত করে দেন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাধীনতা প্রদান করেন।
সংস্থার কার্যক্রম সমূহঃ
১- গণমাধ্যম বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষত সাংবাদিক সমাজ গড়ে তোলা।
২- মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং এই সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে তোলা।
৩- অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করা।
৪- সদস্য ও সুবিধা বঞ্চিতদের আইনগত সহায়তা প্রদান করা।
৫- প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে (সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত) আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
৭- বিভিন্ন অন্যায় অনিয়ম অসংগতির তথ্য দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় প্রচার ও প্রকাশ করা।
৮- বিশেষ ক্ষেত্রে সরাসরি রাষ্ট্রকে অবগত করা।
৯- অভিযোগকৃত ক্ষেত্রে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও সরজমিন পর্যবেক্ষণ করা।
১০- বিশেষ ক্ষেত্রে উভয়ের উপস্থিতিতে মধ্যস্থতা ও সালিশের ব্যবস্থা করন ইত্যাদি।
১১- রাষ্ট্র নিষিদ্ধ ব্যতীত যেকোনো স্থান থেকে তথ্য উপাত্ত ও সংবাদ সংগ্রহ করা। এবং তা গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করা।
১২- যেকোনো শ্রেণী পেশার ব্যক্তিকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা।
১৩- দুস্ত অসহায় সুবিধা বঞ্চিতদেরকে সর্বক্ষেত্রে আইনগত সহায়তা প্রদান করা।
১৪- অন্যায়, অনিয়ম, অসঙ্গতি খাদ্যে ভেজাল,ওজনে মান নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস, মাদক,দুর্নীতি ইত্যাদি সম্পর্কে রাষ্ট্রকে অবহিত এবং তথ্য সেবা প্রদান করা।
১৫- দেশ ও জাতির স্বার্থে মানবতার কল্যাণ,মানবিক সেবা প্রদান করা, এছাড়াও যেকোনো অগ্রগতি ও উন্নয়ন মূলক কাজে অংশগ্রহণ করা।
শাহবাজ জামান
নির্বাহী পরিচালক
মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কেন্দ্র
Human Rights and Media Center (HRMC)