মো: মহিউদ্দিন শাজাহানপুর প্রতিনিধি : বগুড়া জেলার শাজাহানপুরের মালীপাড়া গ্রামে মায়ের ঋণের দায়ভার বহন করতে, টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত লেখাপড়া বাদ দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে।তাদের অভাবের সংসারে পেটের ভাতের যোগান দিতে সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কিছুতেই কাটছেনা এই জিম্মিদশা।ফলে লেখাপড়া ছেড়ে অসহায়ত্বের কড়াল গ্রাসে দুই শিশু শিক্ষার্থী।শিশু দুটি হলো উপজেলার মালীপাড়া গ্রামের আল আমীনের ছেলে রবিন (৭) ও রাব্বী (৯)।
আল আমীন পেশায় একজন দিনমজুর।দিন আনে দিন খাওয়ায় বর্তমান বাজার দরে অসহায়ত্ব পিছু ছাড়েনা কিছুতেই।সাংসারিক এ টানাপোড়েন ও পারিবারিক নানা সমস্যায় নুন আনতে পানতা ফুড়ায়।
এমন পরিস্থিতিতে অভাবের তাড়নায় স্থানীয় একটি খুটির কারখানার মালিক মোশারফের কাছ থেকে দুই বছর আগে রবিন ও রাব্বীর মা ৭০০০ টাকা ধার নেয়।কিছুদিন আগে সংসার ছেড়ে চলে যায়।
এদিকে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় খুটির কারখানার মালিক চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে রবিন ও রাববীকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে খুটির কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করেছে মহাজন।আর টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ২০০ টাকা মজুরীতে কাজ করানো হচ্ছে।
প্রতিবেশী ও বাবা আল আমিন জানান, স্থানীয় মাদরাসায় কোরআন শিক্ষা সহ লেখাপড়া করতো দুই শিশু রাব্বি ও রবিন। কিন্তু মায়ের ঋণের এই দায়ভার বহন করতে, জিম্মি করে তাদেরকে খুটির কারখানায় কাজ করানো হচ্ছে। টাকা পরিশোধ করতে পারলে তারপর শিশু দুটির মুক্তি মিলবে।
এ বিষয়ে মালীপাড়া কওমী মাদরাসার প্রধান মাওলানা বলেন,শিশু দুটির কোরআনের প্রথম পাড়া হাফেজী চলছে এবং লেখাপড়ায় ভাল।এমতাবস্থায় তাদেরকে অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া বাদ দিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
এটা খুবই দুঃখজনক।এবিষয়ে কারখানার মালিক মোশারফের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা পরিশোধ করে যখন তখন নিয়ে যেতে পারে।এতে তার কোন আপত্তি নেই।
এদিকে শিশু দুটি বলছে, প্রতিদিন যে ২০০ টাকা মজুরি দেয়।সেই টাকা দিয়ে তাদের পেটের ভাতই ঠিকমত হয়না। ফলে ঋনের ওই ৭০০০ টাকা পরিশোধও করতে পারছেনা এবং লেখাপড়াও করতে পারছেনা। আর এভাবেই চলছে তাদের জিম্মি জীবন।